
১.
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টুডেন্ট থাকার সময়ে আমাদের পাশের হল - এফ রহমান - এর আবু বকর নামে এক স্টুডেন্ট নিহত হন। ছাত্রলীগের দুইপক্ষের মারামারিতে গুলির আঘাতে নিহত হন আবুবকর। তখন শুনেছি গুলি লেগেছিল তার মাথায়। প্রায় সাত বছর পর জানা যায় আবু বকরকে কেউ খুন করেনি। (প্রথম আলো ২৬/০১/২০১৮)।
নক্ষত্রের দোষেই জগতে বহু ঘটনা ঘটে!
তবে আবু বকরের মৃত্যুর মাস খানেক পর তার ফাইনাল ইয়ারের রেজাল্টে তিনি প্রথম হন। রেজাল্টের খবর পেয়ে আবু বকরের মা রাবেয়া খাতুন বলেছিলেন, ‘আমার নির্দোষ বাবারে যারা হত্যা করল, তাগো বিচার হইলো না! এইডা ক্যামন দেশ!’
২.
২০১৩ সালে আমার একজন বন্ধুকে কনভোকেশনের আগের দিন মারধোর করার পর হলের ছাদ থেকে ফেলে দিতে চেয়েছিল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। হলের একজন কর্মচারী সেখানে তার জীবনের উছিলা হয়ে হাজির না হলে ভয়ংকর কিছু ঘটতো। যা ঘটেছে তাও কম ভয়ংকর নয়।
একই সময়ে একরাতে একজনকে মেরে চোয়াল ফাটিয়ে দিয়েছিল আমাদের সেইম ফ্লোরের একজনকে। যদিও আমি নিজে ভিক্টিম ছিলাম না, কিন্তু সেই ভয়ংকর স্মৃতি (ট্রমা মে বি) থেকে বের হতে আমার প্রায় ৪ বছর লেগেছে।
৩.
আমরা বের হওয়ার দুই/তিন বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে খুবই মর্মান্তিক লেগেছিল হাফিজুর নামে একজনের মৃত্যুর খবর শুনে। হাফিজুর হলে উঠেছিলেন ছাত্রলীগের ‘বড় ভাই’দের মাধ্যমে। শীতের রাতে বারান্দায় থাকতে হতো তার। নিউমোনিয়া ও টাইফয়েড আক্রান্ত হয়ে মারা যান হাফিজুর।
কেউ তো দায়ী না, সেই মৃত্যুর জন্য!
নক্ষত্রেরই দোষ!
৪.
চোর সন্দেহে ফজলুল হক হলে পিটিয়ে মেরে ফেলায় হয় তোফাজ্জল নামের এক ব্যক্তিকে। আপনারা সবাই জানেন এ ঘটনা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মামলা করেছে। এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আশা করি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সকলের জন্য নিরাপদ হবে; বিশ্ববিদ্যালয় সেই সংস্কার সত্যিই করতে পারবে।
৫.
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রায় ৮৭৫ জন নিহত হয়েছেন। হাজারের বেশি আহত। চোখ হারিয়েছেন অনেকে। মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন এমন লোকও অনেক।
এসব অপরাধ যারা করেছেন তাদের বিচারও হবে বাংলাদেশে।
-
৬.
এমন মৃত্যু, প্রাণের অপচয়, অনিরাপদ জীবন অতিক্রম করতে পারলেই তা বাংলাদেশ ২.০; তার আগে নয়।
-
মহানগর
১৯/৯/২০২৪

This work is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International License.
No comments:
Post a Comment