গতমাসে বাংলা ভাষার জাতীয় কিবোর্ড (লে আউট) চিনতে পারলাম। এতদিন যে বিজয় কিবোর্ড ব্যবহার করেছি তার চেয়ে ৩-৪টি কি আলাদা। বাকি সব একই রকম। জনাব মোস্তাফা জব্বারের বিজয় লেআউট শুরুর দিকের কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়েছিল। এটি তাঁর সাফল্য। বাংলা ভাষার জন্য তার অবদান গুরুত্বপূর্ণ।
অবশ্য তার অবদান বাংলা ভাষার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায় কিনা সেটা হয়তো বিজয় প্রস্তুত এবং বাজারজাতকারী কম্পানি হিসাব করে না। শুনেছি বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি অফিসে বিজয় (পুরনো কোডিং এবং লেআউট) ব্যবহার করা ম্যান্ডাটরি করা হয়েছিল; এমনটা কোন বিচারে করা হয়েছে তা জানিনা। তাছাড়া যদি ম্যান্ডাটরি করতেই হয়, তাহলে বাংলাদেশের জাতীয় লে আউট রেখে বিজয় কেন ম্যান্ডাটরি হবে?
যাহোক, বর্তমানে টাইপিংয়ে অন্য চ্যালেঞ্জ রয়েছে যা বিজয় কিবোর্ডের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব না। যেমন কিছু রিসেন্ট সফটওয়ারে বিজয় দিয়ে লেখা যায় না। কারন বিজয়ের কোডিং পুরনো আমলের; প্রায় অপ্রচলিত।
এই লম্বা ভূমিকা বললাম আরেকটি বিষয় জানানোর জন্য। অভ্রর জনপ্রিয়তা থেকে অনুমান করা যায় যে, অভ্র বাংলা টাইপের বড় উপকার করেছে। বাংলা লেখাকে সহজ করে দিয়েছে তার ফোনেটিক লেআউটের মাধ্যমে। তাতে লোকেরা অভ্র দিয়ে লিখতে পারেন খুব সহজে।
বিজয়ের মামলা বা হয়রানির পর অভ্র আর বিজয় লে আউট ব্যবহার করে না। তবে তাদের সফটওয়ারে বাংলাদেশের জাতীয় লে আউট রয়েছে। বিজয়ের লেআউটের সাথে জাতীয় (ন্যাশনাল) লেআউটের পার্থক্য মাত্র ৩-৪টি কি।
অভ্র তাদের সাম্প্রতিক ভার্সনে একটি অসাধারণ কাজ করেছে। আপনি একটি কিবোর্ড লেআউট নিজের মত করে তৈরি করে নিতে পারবেন। যে লেআউটগুলো আছে তাকে সামান্য মডিফাই করে কাজটি করতে পারবেন।
আমি প্রথমে বিজয় লেআউটে টাইপ করা শিখেছি। তাই বিজয় লেআউটে লিখতে অভ্যস্ত। গতবছর একটা সফটওয়্যারে বিজয় কাজ করছিল না। সেই সমস্যা থেকে বের হওয়ার জন্য খুঁজতে খুঁজতে গত মাসে এই চমৎকার সমাধান আবিষ্কার করলাম।
সপ্তাহখানে কষ্ট করে ৩-৪টি কি শিখে নিলে জাতীয় লেআউট শেখা হয়ে যাবে। যদিও বহুদিনের অভ্যাস আনলার্ন করা কঠিন। এছাড়া সামান্য মডিফাই করে জাতীয় লেআউটকে বিজয়ের মত বানানো যাবে। (৫ থেকে ১০ মিনিটের কাজ। এক্সপার্ট হলে আরো কম সময় লাগবে।)
অভ্র টপবারে সেটিংস থেকে কিবোর্ড লেআউট এডিটর অপশন ব্যবহার করে কাজটি করতে হবে। এবং বিজয় শুধুমাত্র পুরাতন ডকুমেন্ট পড়ার জন্য ব্যাকআপ হিসেবে থাকবে।
(ইংরেজি QWERTY লেআউট নিয়ে এমন জটিলতা নেই। এর সম্ভাব্য কারন হয়তো আমাদের বাংলা ছাপাখানার চেয়ে বাংলা টাইপিংয়ের কয়েকশ বছরের ধীর গতি। যেহেতু বলপয়েন্ট আবিষ্কার না হলে আমাদের অনেকেই আজো কলম দেখতে পেতাম না, তাই টাইপরাইটার দেখা দুর্লভ ব্যাপার; টাইপরাইটারে লেখা আরো দুর্লভ। অবশ্য এসব জিইয়ে রাখা ব্যারাম কিনা আমি জানিনা।)
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলাম
মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলাম পরষ্পরকে বিরোধী হিসেবে বয়ানের অন্তত দুইটা ধারা আছে। এই দুই ধারা একে অপরের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। একদল মুক্তিযুদ্ধের দখল চায়...
-
যার যা কাজ, সে তা ঠিকঠাক করলেই ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র ভাল থাকে। মানুষের সুখ-শান্তি বাড়ে। জীবনের জটিলতা কমে। যার যা কাজ, সে যেন তা করে - এই ক...
-
মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলাম পরষ্পরকে বিরোধী হিসেবে বয়ানের অন্তত দুইটা ধারা আছে। এই দুই ধারা একে অপরের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। একদল মুক্তিযুদ্ধের দখল চায়...
-
১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টুডেন্ট থাকার সময়ে আমাদের পাশের হল - এফ রহমান - এর আবু বকর নামে এক স্টুডেন্ট নিহত হন। ছাত্রলীগের দুইপক্ষের মারামারি...
No comments:
Post a Comment