ধর্মকে বিজ্ঞান দিয়ে প্রমান বা অপ্রমান করা অহেতুক জটিলতা তৈরি করে।
যেমন চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী রোজা রাখার উপকারিতা বর্ণনা করা। একজন চিকিৎসক কাউকে যদি রোজা রাখতে বলেন তবে তার বর্তমান স্বাস্থ্যের অবস্থা বিচার করে সেই পরামর্শ দিবেন। তারপর তা হতে পারে বিভিন্ন মেয়াদে। রমজানের এক মাস মিলিয়েই কারো সেই প্রেসক্রিপশনের রোজা রাখতে হবে তেমন সম্ভাবনা কম। প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী রোজা তখন ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন হয়ে যাবে। এখানেই জটিলতা। তাছাড়া রোজা রাখার ধর্মীয় নিয়ম সূর্যোদয় সূর্যাস্তের সাথে সম্পৃক্ত। স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ডাক্তারি নিয়মের রোজা ঘন্টা মেপে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি; দিনের বড় ছোটর বিষয় নয়। কাজেই এসব ধর্মীয় চর্চাকে বিজ্ঞান দিয়ে ভ্যালিডেশন করা ফ্যান্সি এবং অ্যাট্রাক্টিব হলেও বিপদজনক।
একজন বিজ্ঞানী তার চর্চা এবং আবিষ্কারের ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে অনুপ্রাণিত হতে পারেন। তিনি ধর্মীয় প্রয়োজন বা বিশ্বাস দ্বারাও অনুপ্রাণিত হতে পারেন। কিন্তু তাতে বিজ্ঞান ধর্ম হয়ে যায় না, কিংবা ধর্ম বিজ্ঞান হয়ে যায় না। যদিও একজন বিজ্ঞানীর ব্যক্তিগত বিশ্বাস আর তার বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার সমান বিষয় নয়। একজন বিজ্ঞানীও অবৈজ্ঞানিক বিশ্বাস পোষণ করতে পারেন। তাতে তার বিশ্বাস বিজ্ঞানের প্রমাণ হয়ে যায় না। তাকে মেথড মেনেই প্রমাণ করতে হয়ে। বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ভুল প্রমাণিত হলে তার কষ্ট হতে পারে। সত্য মেনে নেয়া বিজ্ঞানীর জন্যও কঠিন হতে পারে।
প্রসঙ্গত ধর্মের বিশ্বাসকে কেউ যদি বিজ্ঞানীর কল্পনার সাথে তুলনা করেন - হোক তা আইনস্টাইনের বরাতে - তবে সন্দেহ থাকে একজন নিষ্ঠাবান ধার্মিক তাতে একমত হবেন কিনা। ধর্মকে ইমাজিনেশন হিসেবে দেখা বরং একটি বিজ্ঞানবাদী দৃষ্টিভঙ্গি।
-
আমার এসব লেখার কথা না সম্ভবত। গতবছর একটা পেপার লিখেছিলাম থিওরি কোর্সে। কার্ল পপার আর টমাস কুন - এই দুইজনের লেখা পড়ে। লেখার শিরোনাম - Science constructs truth. (এর আগে ঢাকায় চিন্তার ইতিহাস পাঠচক্রে অধ্যাপক লিয়াকত আলি কার্ল পপারের ওপর যে ক্লাস নিয়েছিলেন তাতে অংশ নিয়েছিলাম।) পপারের বইয়ের নাম - Conjectures and Refutations, প্রথম প্রকাশ ১৯৬৩।
-
প্রবন্ধ লিখতে গিয়ে বুঝতে পারি টমাস কুনকে লোকেরা অপব্যবহার করে। তার ডিসকোর্স বিজ্ঞান কিভাবে চর্চা হয় অথবা বিজ্ঞানের প্যারাডাইম কিভাবে গড়ে ওঠে এবং ভাঙ্গে তা বুঝার জন্য খুব কাজের। (তার বইয়ের নাম - The Structure of Scientific Revolutions, প্রথম প্রকাশ ১৯৬২।) বিজ্ঞানের প্যারাডাইম ভাঙা গড়া আর যে কোন অনুমানকে বিজ্ঞান ধরে নেয়া এক নয়। লজিকের প্রাথমিক যে সুত্র সিলজিজম সেই ছকেই একে ধরা যায়। যেমন - মানুষ মরণশীল, এর মানে মরণশীল সবপ্রাণীই মানুষ নয়। বিজ্ঞানে অনুমান বা এজাম্পশন আছে, তার ভাঙাগড়া আছে - তার মানে অনুমান আর ভাঙা গড়া থাকলেই তা বিজ্ঞান হয় না।
-
(বিজ্ঞাপণ - ইংরেজি ভাল পারেন, আর ফিলসফিতে আগ্রহী হলে আমার প্রবন্ধটা পড়ে ফিডব্যাক দিতে পারেন। আমাকে ইনবক্স করতে পারেন। পরবর্তীতে এই লেখা বাংলায় লেখার ইচ্ছা আছে।)
-
এই খিচুড়ি টাইপের পোস্ট আপনাকে বিরক্ত করে থাকলে দুঃখিত।
No comments:
Post a Comment