Thursday, January 4, 2024

নির্বাচন কেন আায়োজন করা হচ্ছে?

এই প্রশ্নের আনুষ্ঠানিক উত্তর হিসেবে আওয়ামী লীগ সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কথা বলে। সংবিধানকে লিগালিটির একটা টেকনিক্যাল টুল হিসেবে ব্যবহার করা ছাড়া এই যুক্তির আর কোন শক্তিশালী দিক নেই। এই প্রবণতা সংবিধানের জন্য বিপদজনক, এবং বাংলাদেশের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক। বিপদজনক কারন লেজিটিমেসিহীন এক ধরনের টুল হিসেবে সংবিধানকে ব্যবহার করা সংবিধানের ঘোষিত আদর্শের বিরোধী। এই এবিউসিব সাংবিধানিকতা বাংলাদেশে স্বাভাবিক কারন বাংলাদেশে বর্তমানে একটি সাংবিধানিক সংকট চলছে।

আওয়ামী লীগের বক্তব্য - সংবিধানের বাধ্যবাধকতার কারণে আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করতে হবে।
সংবিধান আওয়ামী লীগকে বাধ্য করতে পারে এমন শক্তি সংবিধানের আছে তা বিশ্বাস করার উপায় কি? এর পক্ষে কোন উদাহরণ পাওয়া কঠিন; বরং আওয়ামী লীগকে সংবিধান, আইন-কানুন, কিংবা কোন বাছ-বিচার দিয়ে দাবায়ে রাখা যায় নাই। আওয়ামী লীগ যে সংবিধান, সাংবিধানিকতা, এমনকি রাষ্ট্রের চেয়ে বহুগুন বড় হয়ে গিয়েছে তা তাদের বিভিন্ন বয়ানের মধ্যে প্রতিদিন জানা যায়। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বাঁচানোর উপায় এই নির্বাচন নয়, বরং এর ফলে আওয়ামী লীগ মোরালি এম্পটি হয়ে যাচ্ছে।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২০১৮-র গান গাচ্ছে - “জিতবে এবার নৌকা”। তখন নৌকা জিতেছে ঠিক; হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ২০১৮র নির্বাচনে যেমন আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্ধী ছিল আওয়ামী লীগের সততা, এবারেও তাই। আওয়ামী লীগ মূলত ২০১৮র নির্বাচনেই মোরালি এম্পটি হয়ে গিয়েছিল। তবে ২০১৮-র নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিজেকে বোঝানোর মত সাংবিধানিকতাবাদ আসার আগের দুনিয়ার যুক্তি হিসেবে পাবলিক ওয়েলফেয়ার বা উন্নয়ন ছিল। আওয়ামী লীগ তার মেগা প্রজেক্টগুলো মোটামুটি শেষ করতে পেরেছে। এসব আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। কিন্তু এর বিপরীতে যে ব্যয় বাংলাদেশ রাষ্ট্র এবং তার জনগণকে বহন করতে হচ্ছে তাতে এই পাবলিক ওয়েলফেয়ারের রাজতান্ত্রিক যুক্তি কনভিন্সিং থাকে না।

এছাড়া নির্বাচন হলেই আওয়ামী লীগের লেজিটিমেসি ঠিক হয়ে যাবে এমনটা ভাববার কোন কারন নেই। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন সেটাই যেখানে আওয়ামী লীগ ছাড়াও অন্য কোন দলের জেতার সম্ভাবনা থাকে। আসন্ন নির্বাচনের মাধ্যমে যেহেতু আওয়ামী লীগ ছাড়া আর সবগুলো দল মিলেও সরকার গঠনের কোন সম্ভাবনা নেই - তাই এই নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন নয়।

নির্বাচনে রাষ্ট্রীয় অর্থের যে ব্যয় হচ্ছে - গণতান্ত্রিক নির্বাচন না হওয়ার কারনে সেসব ব্যয় অন্যায্য এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়। নির্বাচন উপলক্ষ্যে clientelism এর চুড়ান্ত চর্চা হিসেবে এ অপচয় / তছরূপ বহুগুণে বাড়ছে। দীর্ঘ মেয়াদে তা রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে মেরামতের অযোগ্য মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্থ করবে।

Creative Commons License
This work is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial 4.0 International License.

No comments:

Post a Comment

Delulu and Danger of Innocence of Law

The persistent political crisis in Bangladesh is often framed as a binary dilemma: is the nation suffering from a flawed political culture, ...