Saturday, July 30, 2016

সুন্দরবন ও সংবিধানের রাজনীতি বিষয়ক একটি ক্ষুদ্র প্রশ্ন

সুন্দরবন ও সংবিধানের রাজনীতি বিষয়ক একটি ক্ষুদ্র প্রশ্ন


সাংবিধানিক আইনি প্রক্রিয়া মেনে সুন্দরবন রক্ষার দাবিটি অরাজনৈতিক বা বোকামি কিনা?



সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদের বরাত দিয়ে ফেসবুকে সুন্দরবন রক্ষার দাবি প্রচার করছেন অনেকে।

আর এ দাবির প্রতিক্রিয়া হিসেবে ১৯৭২ থেকে্ই কার্যকর এমন একটি সংবিধানের বৈধতার প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। দ্বিতীয় দাবি অনুযায়ী বিভিন্ন গণবিরোধী বিষয় এই সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার মধ্যেই বৈধতা পেয়ে চলেছে/চলছে সেই যুক্তিও আসছে।

এই দ্বিতীয় প্রকারের দাবি একটি দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক প্রশ্ন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস, মানুষের অধিকারের প্রশ্ন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ইত্যাদি বিভিন্ন মানদণ্ডে সংবিধান সংক্রান্ত এই রাজনীতি। সংবিধানের প্রতি ক্রিটিক্যাল রাজনীতি।

অপরদিকে বিদ্যমান ব্যবস্থার মধ্যে থেকেই এই সংবিধানের অধীনে অধিকার চাওয়া কিংবা সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা রাজনৈতিকভাবে অবহেলিত হওয়া উচিত নয়। সব রাজনৈতিক ব্যবস্থা দিনশেষে এইটাই চায়।

যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি সাংবিধানিক পুনর্গঠনের দাবি আর ১৯৭২ সালের সংবিধানের প্রতি ক্রিটিক্যাল রাজনীতিকে জনপ্রিয় করে তুলতে না পারেন, অথবা লোকজন বুঝাতে না পারেন ততক্ষণ তাদেরকে গালাগাল করে কিছুই হবে না।

দুইটা আলাদা রাজনৈতিক প্রশ্ন।
মানুষ বিদ্যমান ব্যবস্থার অধীনেই নিজের অধিকারের প্রশ্ন তুলবে। অার মানুষের সেই দাবিকে মানুষের অধিকারের সামগ্রিক আন্দোলনের একটা কৌশল হিসেবে দেখা উচিত। যে কৌশল রাষ্ট্র এবং আইন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে কাজ করে। যদিও এ দেখা স্ববিরোধী মনে হতে পারে তবুও বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার এই অস্পষ্টতার সময়ে একে বরং সমন্বয়ী করতে হবে। ন্যূনতম পক্ষে সাময়িক কৌশল হিসেবে গ্রহণ করা উচিত। নয়ত ক্রিটিক্যাল রাজনীতি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ এবং জনসমর্থনহীন হয়ে যাবে।

আবার, শুধুমাত্র ক্রিটিক্যাল রাজনীতিই সবাইকে করতে হবে এই দাবি মানুষকে বরং ক্রিটিক্যাল রাজনীতি বিমুখ করতে পারে।

তাছাড়া বাংলাদেশে মানুষের অধিকারহীনতার ইতিহাস সবটাই সাংবিধানিক ব্যবস্থার ইতিহাস নয়। বরং সাংবিধানিকতার পরাজয়ের ইতিহাস। সাংবিধানিকতার অনুপস্থিতির ইতিহাস। কাজেই সতত পরিবর্তনশীল রাজনৈতিক ব্যবস্থার কারনে সাংবিধানিকতা স্থায়ী হয় নি।

১৯৭২ সালের সংবিধানকে মহৎ করে তোলা বা সংবিধান বন্দনা করার উপায় হিসেবে নেয়ার একটা প্রবণতা আছে। সেই প্রবণতাই হয়তো ক্রিটিক্যাল রাজনীতির জনগণের সংবিধান সম্মত দাবিকে সন্দেহ করার কারন হতে পারে।

কাজেই এখানে সন্দেহটা সংবিধান বন্দনা বা সংবিধান পূজার জন্য বরাদ্দ রাখলেই ভাল। বন্দনার বাইরেও সংবিধানের অনেক বড় ভূমিকার রাখার সুযোগ আছে। মানুষের অধিকার আদায়ের পদ্ধতি এবং কৌশল হিসেবে সংবিধান অনুযায়ী দাবিকে দেখলে গণমানুষের রাজনীতি বুঝতে পারা সহজ হবে। এবং গণমানুষকে রাজনীতির মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করাও সহজ হবে।

সংবিধান অনুযায়ী অধিকার আদায়ের দাবি, এর প্রক্রিয়া এবং ফলাফল সরাসরি রাজনৈতিক আন্দোলন, ক্ষমতার মাধ্যমে সিদ্ধান্তগ্রহণের প্রক্রিয়া ও ফলাফল থেকে আলাদা হতে পারে। এবং সংবিধানের সীমাবদ্ধতাও হয়তো অনেক। তবুও একে মানুষের রাজনীতি ও অধিকারের প্রশ্নে সহযোগী হিসেবে দেখাই উচিত। এবং সংবিধানের প্রতি ক্রিটিক্যাল থাকা সহই তা হওয়া উচিত। দুটিকে বিরোধী করে নয়।
_

কাজেই যারা সংবিধান অনুযায়ী সুন্দরবন রক্ষার দাবি জানাচ্ছেন তাদের দাবি চলতে থাকুক। হয়তো সাংবিধানিক সক্রিয়তাই বাংলাদেশের রাজনীতিতে পথ দেখাবে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পথ করে দিবে।
___

Friday, July 29, 2016

Sense of Style in Writing

Sense of Style in Writing

লেখালেখির স্টাইল সংক্রান্ত ইংরেজি একটা বই খুবই জনপ্রিয়। যারা ইংরেজি লেখালেখি নিয়ে কাজ করেন তাদের কাছে।
বইটার নাম The Elements of Style। ছোট সাইজের বই (পিডিএফ)। লেখক:  William Strunk Jr.  এবং E. B. White
গ্রামার ইত্যাদির কিছু নিয়ম কানুন সহ বইটা লেখার স্টাইল সম্পর্কিত অনেক জরুরি নিয়ম বলে দিয়েছে। এই নিয়মগুলো অবশ্য অবশ্য পালনীয় হিসেবে মানেন অনেকে। ইংরেজি লেখতে ইচ্ছুক লোকদের প্রাথমিক প্রশিক্ষণের বই হিসেবেও এটি ব্যবহৃত হয়।
ইংরেজি ভাষার লেখালেখির স্টাইল সংক্রান্ত সাম্প্রতিককালের আরেকটা বই আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। বইয়ের নাম The Sense of Style: The Thinking Person's Guide to Writing in the 21st Centuryব্যাকরণ সহ বিভিন্ন বিষয়ে একটা স্পষ্ট ধারনার জন্য সহায়তা দিবে এবং আগ্রহী করবে এই বই।
The Sense of Style. Book Cover.
এই বইয়ের লেখক স্টিভেন পিঙ্কার। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। ভাষাতত্ব, কগনিটিব সাইন্স বিষয়ে পণ্ডিত। আর এই বইটা লিখেছেনও তার এই পাণ্ডিত্য কাজে লাগিয়ে। (এছাড়া বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান বিষয়ে কাজের জন্য পরিচিত তিনি।) তার এই বইয়ের পরামর্শ যুক্তিগুলো তার বিভিন্ন বক্তৃতায় পাওয়া যায়। ইউটিউবে এ বিষয়ে তার অনেকগুলো বক্তৃতা আছে। রীতিমত খাতা কলম নিয়ে ক্লাস করার মত তার এই বক্তৃতা শুনেছিলাম।
বাংলা ভাষায় লেখালেখির স্টাইল সংক্রান্ত এরকম কোন বই আছে কিনা জানি না। তবে জরুরি দরকার।  কি কি স্টাইলের লেখা পাওয়া যায় তার একটা খসড়া হিসাব জরুরি। তাহলে অনেকের গাঁটের ভেতর লুকানোর অভ্যাস দূর হয়ে বাংলা ভাষা আরো অগ্রসর হতে পারবে।

নিজেকে পুড়িয়ে জ্বলি

সেইসব ঝরে পড়া লাল ফুলগুলো
নদীর মায়ের পাশে...
ফসলের পায়ের পাশে...
চুপচাপ আলো হয়ে মিশে থাকে

প্রাণ ও প্রকৃতির ফুসফুসে বাতাসের কাব্য শোনাতে গিয়ে
শীতের গান শুনে গেল এই ভরা বর্ষায়
কোন পাতা ঝরে-
বিষাক্ত ঝড়ে
প্রতিরোধে মাথা তুলে গভীর সবুজ
লাল সবুজ হয়ে যাবার স্পর্ধা কোথা থেকে তুলে আনে জীবনকে ছেনে!!

যৌথ স্বপ্ন আর নিশ্চয়তার নিরাপদ সংসার দেবে বলে
‘প্রাণ ও প্রকৃতির হাসফাস শুনতে চাই না তাই’
নিজেকে পুড়িয়ে আজ অালো জ্বেলে যাই...


২৮-২৯ জুলাই ২০১৬

Tuesday, July 26, 2016

বাসনা

প্রথমবার সমুদ্র দেখা চোখের মত বিস্ময়াবিষ্ট, উৎফুল্ল, অসহায়, অস্থিরতায় ভাসা...
চোখে ত সমুদ্র ধরে না; কিংবা সমুদ্রের উপরের অাসমান
অথচ বিলের ধারের অাসমান কত অনায়াসে এটে যেত শিশুতোষ চোখে
নদীও

সমুদ্র অসহায় করে তোলে

স্থির করে তোলে
পরাজিত

কিন্তু গ্লানি নেই
গর্জন তবু কর্কশ নয়
নিজেকে সমর্পন করা যায় মতো গভীর প্রশস্ত
নীল-সাদায় অাকাশটাও তাকিয়ে থাকে
মানুষের হৃদয়ের অানত ভঙ্গির প্রতিনিধি হয়ে

রাজা হওয়ার লোভে
কাটাই বেদনার্ত দিন
সমুদ্র শাসন করি- সেই হিম্মত কোথা পাই
দরিয়ায় ফসল তুলি- সিন্দাবাদ তো নই

কোথায় কলম পাব সমুদ্রর পিতা
কোথায় কাগজ মিলে সমুদ্রের মায়ের মতন
কোথায় গেলে ঈগলের দৃষ্টি পাব সমুদ্রের চোখে চোখ রাখার বাসনায়

বৃক্ষের কাছে যদি খুঁজে অানি দেহ
কিংবা জমিনের হাড়ের ভেতর লৌহ ইস্পাত
দুনিয়ার কলাজ্ঞানে বানাই জাহাজ
অহম খণ্ডিত তবে কোথায় লুকাই

নত হই সমুদ্রের কাছে
ডুবে যাই নুনের ভিতর
অথবা অহমের ভাগাড় হয়ে নগরের লউ রাখি বুকের উপর

অপরূপ গল্পের ভিতর
নক্ষত্রে পা তুলে শুনি সমুদ্রের সুর...
হায়!
পূর্বনারীর ভুলে ভেঙ্গে গেছে সাতজনমের সিঁড়ি

সহজ কোষের মাঝে
কোষাঘারের হিসাব ছাড়া কাটাও বেনামি জীবন...
ফুল পশু কীট লতা কৃমির মতন
অাবার জন্ম নিলে সমুদ্র হবি... অথবা সমুদ্রের বাপ

২৬/০৫/২০১৬

মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলাম

মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলাম পরষ্পরকে বিরোধী হিসেবে বয়ানের অন্তত দুইটা ধারা আছে। এই দুই ধারা একে অপরের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। একদল মুক্তিযুদ্ধের দখল চায়...