Monday, July 26, 2021
আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ
Sunday, July 25, 2021
জীবন যন্ত্রণা
জীবনের যন্ত্রনা বিষয়ে কিছুদিন আগে একখানা কৌতুক ধার করেছি। পাওনাদার সৈয়দ মুজতবা আলী। তার সাথে এক উকিলের পরকাল বেহেশত দোজখ ইত্যাদি বিষয়ে আলাপ হয়েছিল। কথায় কথায় উকিল জানাল যে - ’আমি বেহেশতে বিশ্বাস করি, দোজখে আমার বিশ্বাস নাই। মৃত্যুর পর সকলেই স্বর্গে যাবে।’
করোনার ভিন্ন প্রভাব
করোনার কারনে কতকিছুই বদলে গিয়েছে। ঢাকায় ৮ মার্চ ২০২০ এ করোনা সনাক্তের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেই জ্বর-কাশি-গলাব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ আমাকে দেখা দিয়ে গেল।
Saturday, July 10, 2021
হাড্ডি
শিশু শ্রমের ব্যতিক্রমি অনুমতি আইনে ছিল,
শিশু জন্মানোর অনুমতি ছিল না অগো বাপ-মায়ের;
আগুনভরা কারখানায় জানালা বন্ধ আর সিঁড়ি না রাখার অনুমতি ছিল,
তবে আজরাঈলের অনুমতি ছিলনা জান কবজ করার;
যদিও আল্লাহর রহমতে বাইচা গেল শ খানেক মানুষ।
শয়তানের ওয়াসওয়াসায় মরল ৫১।
দেড়হাজারের বেশি লোকে বেহেশতের এই ছয়তলায় করত কাজ;
আলহামদুলিল্লাহ ফর এভরিথিং, ওভারটাইমে মাত্র দেড়-দুইশ ছিল আজ।
জুসের স্ট্র বসাইয়া খাইতেছিলাম তাগো রক্ত
শালার গরীবগুলা জন্মায় শুকনা হাড্ডি হাড্ডি শরীরে
রক্ত বের হয় খেঁজুর গাছ চাঁছার তৃতীয় দিনের মতো
তবে সুবিধা একটা আছে
গাদাগাদি কইরা হাসেমের ছয় খোপ উন্নয়ন স্বর্গে
হাজার দেড়েক রাখলেও তারা কর্ম করিয়া বাঁচে
চিকন দরজা আর সিঁড়ি দিয়াও অনায়াসে
দল বাইন্ধা তারা ঢুইকা পড়ে সুড়সুড়
যেন অল্প পানিতে পাতা চাইয়ে
ঝাকে ঝাকে পুটির পোনা খাইত মরনগুড়
মচমচা ভাজা পুটি, আহা, ৪৮টা পেলে
প্লেটে পেটে নাস্তা হতো
বর্ষার বৈকালে।
দিনটা বাঙালি হতো, খাঁটিও অল্পনা;
গতরে পুটির কম – এইসব গরীবের ছাও,
হুদাই উড়ায়ে দিল ফ্রাইড ফিশ কল্পনা।
আমি অভিজ্ঞ মানুষ। মানুষ গরু চিনি।
বলদার পো* দিয়া টাকা বেরয় না
মোবাইল কম্পানিতে কথা বেচা মধ্যবিত্তের সাথে
এমন সরল সত্যও জানি।
তবে আমি আরো জানি বাঁকা অংকটাও।
একেকটা পোড়া বলদের দাম মন্দ না
জ্যান্ত বলদ বছরে গোবর দেয় হাজার হাজার টেকার;
এইসব পোড়া গরীবের হাড্ডি দিয়া
দশটেকার দাঁত খিলানও বানানো যায় না।
সেই তাগো আবার ভণিতা আবদার:
‘আমার মায়ের হাড্ডিগুলা খুইজ্জা দেন স্যার’।
এই ছোট শুকনা হাড্ডি দিয়া করবি কি?
ডিসি সাহেব বলেছেন – বিইশ হাজা-া-র টাকা দেয়া হবে
লাশ প্রতি (মানে এক সেট হাড্ডির জন্য)
তোরা সেই টাকা দিয়া বলদের হাড্ডি কিনলে অনেক ওজনদার হাড্ডি পাবি,
সামনেই কোরবানী
এখনই খোঁজ রাখলে খোদার দয়ায় হাড্ডি কিনার সুযোগ মিলতে পারে নসিবে
যা, টাকা পাইলে ভারি ভারি হাড্ডি কিনিস।
অহন ঘ্যান ঘ্যান করিস না; দল বাইন্ধা ঘ্যান ঘ্যান করলে
তোদের হাড্ডি ভাইঙা যাবে মহামান্য আইনশৃংখ্যলার শিংয়ের গুতায়।
তা ছাড়া বিল্ডিংয়ে কি আমি আগুন দিছি?
গরীবের হাড্ডিতে ঠোকাঠুকি কইরাই এই আগুন লাগছে।
(আমি তাজ্জব হয়া যাই —
এই গরীবগুলার হাড্ডির ভিতর থেইকাও প্রেম বাইর হয়;
দাউ দাউ আগুনের ভিতর
প্রায় বন্ধ হইয়া যাওয়া শ্বাস লইয়াও
এক মাইয়া তার স্বামীরে ফোন কইরা জানাইছে – বিল্ডিংয়ে আগুন লাগছে।
লাইলি মজনু না
বেহুলা লখিন্দর না
রোমিও জুলিয়েট না
কাগজের আগুনে পুইড়া ছাই হয়া যায় এমন পলকা দেহ আর পাতলা হাড্ডির ভিতর কত ঢং
মৃত্যুর আগেও প্রিয় মানুষ খোঁজে!)
যাইহোক, সবকিছুকেই দেখতে হবে পজিটিবলি।
তাজরীন, নিমতলি, চকবাজার, বনানী, আর সব পোড়া বস্তি থেইকা উন্নয়ন পর্যন্ত আমাদের লেসন নিতে হবে।
কবি তাই বহু আগেই বলে গেছেন —
‘আমি জাহান্নামের আগুনে বসিয়া’
হাসি উন্নয়নের হাসি।
—
Friday, July 9, 2021
পাগলা ডুমুর ১
এক্ষনে যে দাদা ভান্তে আর তার সাগরেদের কথা কহিলাম তিনিও ব্যতিক্রম নন। তাহাদের যাত্রা পথে একটি একহাটু জল কিন্তু হাটু কাঁপানো স্রোতের নদীর দেখা মিলিল। নদীর পাড়ে সাজসজ্জায় রূপ বাড়াইয়া এক রুপবতী নারী অপেক্ষমান। মুনিঋষিদের যাত্রা পথে বিপদ একলাই আসে। ভ্রার্তৃ-পুত্র-পিত কেহ সহায় হইয়া থাকে না। যদিও এখনকার সচেতন সাহিত্যে কিশোরী তরুণী সকলেই অন্তত প্রিয়ংবদা সহযোগে শকুন্তলার মত গল্প উপন্যাসে বিচরণ করেন। যাহোক, হাটু কাঁপানো স্রোতস্বিনী পার হইবার সাহস যদি রুপসীর থাকিত তবে প্রজ্ঞার ঈশ্বর তাকে দাদা ভান্তের কাধে চড়াইত না। রূপসীকে দাদা ভান্তে কাধে চড়াইয়া —বর্ষাকালের বাঙালি জামাইরা যেমন নতুন বউকে উদ্ধার করেন, সেইমতন— নদী পাড় করাইয়া দিলেন।
পুনরায় পথ চলিতে লাগিলেন তারা। শিষ্য কিছুতেই আহত বাকবুদ্ধিকে সুস্থ করিতে পারিল না। বারবার দাদা ভান্তেকে জিজ্ঞাসা করিল আপনি এই কাজ কেন করিলেন। সাধনার পথে এমন কর্ম হইতে দূরে থাকিবার নিয়ম। রূপবতী শুধু দেখিলে না হয় অল্প বলিয়া ছাড় দেয়া যাইত; আপনি ত শুধু দেখেন নাই, ছুঁইয়াছেন। শুধু স্পর্শ করিয়াছেন বলিলে আমার কাতরতা শেষ হয় না, আপনি তাহাকে কাধে লইয়াছেন। তাও যদি কাধে লইয়াই আপনার ভুল বুঝিতে পারিয়া সাথে সাথে নামাইয়া রাখিতেন, তাতেও আমার গুরুভক্তি রক্ষা পাওয়ার একটা সম্ভাবনা ছিল। আপনি এক অপরিচিত রূপবতী নারীকে কাধে চড়াইয়া নদী পার করিয়া দিয়াছেন। সদাশয় গুরু ভান্তে, আপনার প্রতি আমার ভক্তির উষ্ণতার ভেতর স্রোতস্বিনীর শীতল জল না ঢালিয়া দিলে আজ আমার তপস্বার অগ্রগতি এমন করিয়া নদীতীরে আছাড় খাইত না।
দাদা ভান্তে চুপ থাকিয়া যাত্রাপথ অতিক্রম করিতেছিলেন। কয়েকমাইল হাঁটার পর দিনান্তের বিশ্রামের জন্য তিনি থামিলেন। শিষ্য দাদা ভান্তেকে এই রুপবতীকে স্কন্ধদান বিষয়ে প্রশ্নে কটাক্ষে ত্যক্তবিরক্ত করিবার চেষ্টা হইতে বিশ্রাম লাভের কোন লক্ষ্যণ দেখাইল না। অতঃপর দাদা ভান্তে মুখ খুলিলেন। বলিলেন, আমি তো তরুনীকে নদীর পাড়ে রাখিয়া আসিয়াছি, তুমি এখনো তাহাকে বহিয়া বেড়াও কেন?
-
দাদা ভান্তের সাথে আমরা শিষ্য মারফত আর কোন আলাপ যাতে করিতে না পারি প্রজ্ঞার ঈশ্বর সেই ব্যবস্থা করিয়াছেন গল্প শেষ করিয়া। তবুও আমরা আমাদের জীবনে বহু বোঝা বহিয়া বেড়াই, জীবন কুঁজো হয়ে যায় সটান দেহ আর শ্যাম্পুকরা চুলের নিচে মগজের ভেতর।
Thursday, July 1, 2021
আহমদ ছফার বাসনা
আহমদ ছফার চিন্তার বৈপরিত্য খুঁজে পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু চিন্তার বৈপরিত্য বা কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে কি যুক্তি দিয়েছেন তার চেয়ে বড় ছফার বাসনা। ছফার বাসনার কারনেই ছফা গুরুত্বপূর্ণ। ছফার বাসনা কি ছিল?
Delulu and Danger of Innocence of Law
The persistent political crisis in Bangladesh is often framed as a binary dilemma: is the nation suffering from a flawed political culture, ...
-
মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলাম পরষ্পরকে বিরোধী হিসেবে বয়ানের অন্তত দুইটা ধারা আছে। এই দুই ধারা একে অপরের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। একদল মুক্তিযুদ্ধের দখল চায়...
-
যার যা কাজ, সে তা ঠিকঠাক করলেই ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র ভাল থাকে। মানুষের সুখ-শান্তি বাড়ে। জীবনের জটিলতা কমে। যার যা কাজ, সে যেন তা করে - এই ক...
-
১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টুডেন্ট থাকার সময়ে আমাদের পাশের হল - এফ রহমান - এর আবু বকর নামে এক স্টুডেন্ট নিহত হন। ছাত্রলীগের দুইপক্ষের মারামারি...