জীবনের যন্ত্রনা বিষয়ে কিছুদিন আগে একখানা কৌতুক ধার করেছি। পাওনাদার সৈয়দ মুজতবা আলী। তার সাথে এক উকিলের পরকাল বেহেশত দোজখ ইত্যাদি বিষয়ে আলাপ হয়েছিল। কথায় কথায় উকিল জানাল যে - ’আমি বেহেশতে বিশ্বাস করি, দোজখে আমার বিশ্বাস নাই। মৃত্যুর পর সকলেই স্বর্গে যাবে।’
উকিলের ব্যাখ্যা হচ্ছে বেহেশতে কালাভুনার ডেগচি ঘুরে বেড়াবে, আস্ত রোস্ট গাছে ঝুলবে, শরাব মধু দুধ নদী হয়ে বইবে। আরাম আয়েশ ভোগবিলাসের কোন কমতি থাকবে না। চাহিবা মাত্র সকলই পাওয়া যাবে।এসব তো কল্পনা করা যায়, তাই বেহেশত আছে।
আর নরকের ব্যাপারটা কল্পনাতেও আসে না। এই দুনিয়ার চাইতেও খারাপ জায়গা হয় নাকি! কাজেই দোজখ নাই।
এই কৌতুক কিংবা বজ্রপাতের হাসাহাসিতে আপনারা জানেন, দুনিয়ার চাইতে যন্ত্রনাময় জায়গা আর নাই। জীবন যে শিটি ব্যাপার তা আপনারা জীবন দেখে অনেকেই বুঝে গেছেন। মোটিভেশন লেখকরা দিবালোকের ন্যায় ফকফকা করে লিখে রেখেছেন, এই শিটি জীবনে বুলশিট কাউশিট কোনটা গায়ে মাখবেন তা জাইন্যা আর মাইন্যা নিলেই কেল্লা ফতে। মানে জীবন যুদ্ধে জয় সুনিশ্চিত।
আপনারা এই কথা অন্তরে ঢুকায়ে নিতে পারেন, জীবনের যন্ত্রণা হইতে মানুষের নিস্তার নাই, আর মোহমুক্তির সাধনা করার জন্য ডুমুরতলাও (মানে ত্বীন ফলের গাছও) সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না, কাজেই যন্ত্রণা বাছাই করার স্বাধীনতাই মানুষের আদি ও আসল স্বাধীনতা।
-
(বাংলা ভাষায় ’স্বাধীনতা ব্যবসায়’ কিতাবেও গ্রিক পুরাণ থেকে ধার করে এমন কথা বাজারে ছাড়া হয়েছে। স্বাধীনতা ব্যবসায় মূলত স্বাধীনতা বিরোধী কিতাব। লিবারেলিজমের ক্রিটিক এবং ক্রিটিকের তর্জমা। পেইন বাইছা লওয়ার নামই স্বাধীনতা ব্যবসা। বন্ধুদের বলে রাখি, উক্ত কিতাবের অসমআলোচনা লেখার ইচ্ছা এখনও যন্ত্রণা পর্যন্ত গড়ায় নাই।)
-
/ জুলাই ২৪, ২০২১
No comments:
Post a Comment