Tuesday, November 28, 2017

গরমতেলের ফেরেস্তারা

সত্তর সত্তর হাজারে হাজারে ইনফিনিট সংখ্য়ক ফেরেস্তা আল্লার।
আমার ডান হাতে ছিল কাচা এক আলু পরোটা অার বা হাতে ধরে রেখে ছিলাম গরম তেল নাচতে থাকা কড়াইয়ের হাতল।
ফেরেস্তারা জপছিল আল্লার হাজার সেফত। মানুষের জানা ও কল্পনার ভেতরে বাইরে সত্তর হাজার সুপার কম্পুটারের সুপার ঢুপার মেমরি সমান গুনগান গুনগান গুনগান গুনগান .... এসমে আজম... আসমাউল হুসনা ... অনন্ত অসীম প্রেমময় সেফত।
অামি ভেবেছিলাম এই সন্ধ্য়ায় পেট থেকে মগজ পর্যন্ত জাগিয়ে তুলব গোলাপী শহর জয়পুরের অালু পরোটার স্বাদ ..
অথচ জানিনা পৃৃথিবীতে চাষাবাদ শুরু হওয়ার পর মান্না সালওয়ার বাবুর্চি ফেরেস্তারা এখন কি করে? কেউ কেউ নিশ্চয়ই এখনো বেকার।
কেয়ামতের ঢের দেরি। তাই কিছু নিশ্চয়ই আছেন ইস্রাফিলের এসিসট্যান্ট - কাজহীন। বিসিএস ব্য়াংক বিচারকর্ম কিংবা অারো যা লোভনীয় সরকারি চাকরির কম্পিটিশন - সেসবের প্রিপারেশন কোচিং কিছুই করেন না তারা। ঠায় দাঁড়িয়ে আছেন ইস্রাফিলের আশেপাশে ইস্রাফিলের বাঁশির সময় হাততালি দেয়ার জন্য। কেউ কেউ তবলায় দাদরা বাজাবেন। তারাও বেকার এখন।
ডান হাত থেকে পরোটা কড়াইতে নামতেই নাচতে থাকা তেল লাফিয়ে চড়ল অামার বাঁ হাতে।
অথচ আল্লার সেফতে কখনো ঘাটতি ছিল না বরং ঢের ঢের বেশি অাছে জমায়েত সত্তর সত্তর হাজারে হাজারে নুরানি পর্দার আড়ালে আড়ালে।
কেউ একজন আসতে পারত নবি ইসরাঈলের সন্তানদের মান্না সালওয়া বানানোর অভিজ্ঞতা নিয়ে। কাজ করত শেফ এসিসটেন্ট, আলু পরোটা বানানোর সন্ধ্যায়। আমার সঙ্গী হয়েছিল ডিমের স্বচ্ছ শীতল অংশ যার মাঝখানে কুসুমের মত বসে ছিল গোলগাল ফেরেস্তা এক।
আমার বাঁহাতের জ্বলুনি-পুড়নির জন্য নেগলিজেন্সের দায় কিছুটা ঈশ্বরের ডান দিকে দাঁড়ানো ফেরেস্তাদের। এর চেয়ে উন্নত দায়ভাগ ভারতীয় হিন্দু আইনের কোন স্কুলেও নেই।
-
‘গরমতেলের ফেরেস্তারা’ একটি জ্বলন্ত দুঃখের দোহা। ২৬/১১/২০১৭-র সন্ধ্যা।

Tuesday, August 22, 2017

পেঁচা

 ~

ভেড়ার পা‌লের ‌মত অপ‌রি‌চিত দি‌ন শে‌ষে ছাতার ফু‌টোর মত বিষা‌দের দৃশ্য গুন‌তে গুন‌তে,
বা‌কি ছিল একটুকু কথা - মিনার্ভা দেবীর পেঁচা ডানা মে‌লবে সন্ধ্যার পর;
অথচ রাত্রি গভীর হ‌য়ে গেল।
প‌রিত্যক্ত শহ‌রের থমথ‌মে ভ‌য়ের মত জলপাইগা‌ছের ছায়ায় রাজহাঁস ঘু‌মি‌য়ে থা‌কে বীণার তারে কণ্ঠ রুদ্ধ ক‌রে।
...
চার‌দি‌কে শকুন কা‌ন্দে, ঠো‌টে ঠো‌টে মড়‌কের ঘ্রাণ।
...
(কেউ কেউ জন্মা‌বে নিশ্চয়ই -
আমাদের পূজা নিও, আর নিও রুকু ও সালাম।)
 ~
(21/8/2017)

Saturday, August 19, 2017

সরস্বতীর হাঁস

~সরস্বতীর হাঁস~



পৃথিবীতে এককালে একটাই পাখি ছিল,
উড়ত।
অথবা সব পাখিরাই উড়তো।

দুরন্ত এক পাখি একদিন ডুব দিল পানির ভিতর
গলা পর্যন্ত গিলে খেল হরেক মাছ
পেটের ওজনে নুয়ে গেল পাখা
একদিন পর ভাবল সে পাখি
আবার উড়বে সুনীল আকাশে

উড়ার মত হালকা হতে হতে পাখির আবার ক্ষুধা লেগে যায়
লোভী পেট আবারো টানল তাকে গভীর জলে
আবারো সে খেল অনেক অনেক...
শামুক ঝিনুক শ্যাওলা
যা কিছু হজম হয় পাকস্থলীর পাকে
আবার নাড়ীভুড়ি আটকালো পাখিটাকে পৃথিবীর মাটিতে
আরো একদিন অপেক্ষায় রইল সে
আরো একদিন
আরো একদিন
একে একে আরো অসংখ্য দিন

তারপর-
পাখিটা হাঁস হয়ে গেল।

পাখিরা পেটুক লোভী কিংবা অলস হয়ে গেলে হাঁস হয়ে যায়;

আর
মানুষেরা হয় বাঙালী মাস্টার।

৩ এপ্রিল ২০১৬।গ্রিন রোড

অংকন উইকিপিডিয়া থেকে সংগৃহীত।

Friday, June 9, 2017

আলাপ

~আলাপ~
শীতঘুম চেয়েছিলেম দারুন ফাগুনে?
চৈত্ মাস ছুঁতে গিয়ে পুড়ব আগুনে?
কি শখে আগুন ধরি, কি শখের পোড়!
নীরবে গড়ায় ধূসর অলৌকিক মোড়!

তবু কেন ঘুম আসে অন্তরের ভিতর?

: লো‌কেরা চন্দ্রে যাও, লৌ‌কিক মঙ্গলে ঘুরো
- ‘আমারে দে‌খিয়েন না বা‌ইক্যে বেসুরো’
‌: দেই‌খো, দেখানো লোকেরা হরেক তামাশা,
এক্কেরে যাদুতে বানায় কথার বাতাসা

কথায় মুখটা ভরাট-
কই যামুু, কোথায় ফালামু,
‌খেচর ক‌বির মতন রা‌ত্রি ভাঙামু?


১৭/৩/২০১৭
Photo - wfop.org

ধ্যান


গৌতমের ধ্যানের মত উজ্জ্বল চাঁদ -
‌তারারা চন্দ্রস্নাত চতুর্দশী জলে,
আগামীকাল তবে বুদ্ধ হবার দিন,
ঘুমাও চাঁদের মেয়ে বো‌ধিবৃক্ষ তলে।

গঙ্গা সাগরে ভাসে সদাগরী নাও,
‌লোকেরা দৃ‌ষ্টি রাখে-
‌বেহুলার ভেলা চড়ে‌ তু‌মি কই যাও!

সমুদ্র তোমার মেয়ে তু‌মি তার মা,
সবুজ শঙ্খ ভরা তোমার এই গা।
প্রজ্ঞা পদ্মে দোলে প্রাণের আদ‌র,
তোমারে জড়াতে চায় বো‌ধির চাদর!

(৯.৫.২০১৭/ এডিট ৫.৫.২০২০)
Photo - shutterstock


অনুগত বাতাস


বাতাসের মুখে লাগাম দিয়ে উড়াল শিখল মানুষ এবং কুফরি করলো মধ্যাকর্ষণ শক্তির সাথে; নিজের উপর ঈমানের বাক্য নাজিল হল মানুষের নিজস্ব ছহিফায়৷
মানুষের কালাম এবং/অথবা অাসমানী কিতাব নিয়ে মানুষ কি সংকটে অাছে?

যেমনটা সে ছিল এবং ছিল না তার প্রথম এসেম শেখার দিন থেকে!

(১৪.৫.২০১৫)

আমপাতা ছেড়া ছেড়া


Image may contain: plant

অাম্বিকা দেবীর ধ্যানে পাকা অাম গণেশ লয়ে যায় চতুর্থীতে এসে
বুইড়া গল্প ফাদে দুই বিঘা জমিনের গাছের তলে বসে
ভারত পাকিস্তান একজাতি অাজো, অাম তাই বলে;
এদেশে, জাতীয় অামের গাছে ইঁচোড় সমানে ফলে

অামপাতা জোড়া নয়, অামও থোকা থোকা
মিথ্যা ছড়াও ছড়াও-
জাতিতো ফোকলা তার মগজেও পোকা
(২২.৫.২০১৭)
Image may contain: plant, outdoor and nature


বিপন্ন টাটলছানা


এত রঙ ক্ষিপ্ত অালো ভাল লাগেনা।
সাগ‌রে ভাস‌বে চাঁদ অামা‌কে পথ দেখা‌বে
বা‌লি‌তে ডুবি ও ঘুমাই
অা‌মি তো‌ টাটল ছানা।
‌মানুষের হিংস্র অা‌লোয় প্রাণ বাঁ‌চেনা;
‌তোমা‌দের বজ্র অা‌লো ভাল লা‌গেনা।
(মাঝে মাঝে বিপন্ন হও)


(২৩.৫.২০১৭)


চিকিৎসা ব্যবস্থার রোগ - ১

গুরুদেবই ভরসা। তারে দিয়াই শুরু করি।
“বৈজ্ঞানিক নিয়মের প্রতি অবজ্ঞা মানুষের পক্ষে কত স্বাভাবিক আমরা প্রতিদিনই তাহার প্রমাণ পাই। যে ডাক্তার নিপুণ চিকিৎসার দ্বারা অনেক রোগীর আরোগ্য করিয়া থাকেন, তাঁহার সম্বন্ধে আমরা বলি লোকটার হাতযশ আছে। শাস্ত্রসংগত চিকিৎসার নিয়মে ডাক্তার রোগ আরাম করিতেছে এ কথায় আমাদের আন্তরিক তৃপ্তি নাই; উহার মধ্যে সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রমস্বরূপ একটা রহস্য আরোপ করিয়া তবে আমরা সন্তুষ্ট থাকি। [....] শাস্ত্রসংগত চিকিৎসার কাছে আমরা অধিক আশা করিতে পারি না–এমন রোগ আছে যাহা চিকিৎসার অসাধ্য; কিন্তু এপর্যন্ত হাতযশ-নামক একটা রহস্যময় ব্যাপারের ঠিক সীমানির্ণয় হয় নাই; এইজন্য সে আমাদের আশাকে কল্পনাকে কোথাও কঠিন বাধা দেয় না।” (রবীন্দ্রনাথ/ বৈজ্ঞানিক কৌতূহল)

চিকিৎসা যে মানুষের জ্ঞান বুদ্ধি অভিজ্ঞতা প্রসূত এক জরুরি কাণ্ড- এই কাণ্ডজ্ঞান জাতির হয় নাই। হাতযশ বলিলে কোন কোন ডাক্তারেরও হয়তো একটু আধ্যাত্মিক তৃষ্ণা নিবারন হয়, তবে তাতে বাঙালির বুদ্ধির চোখ ঠুলি হইতে নিরাবরন হয় না।

রোগটা কি আর তার চিকিৎসা কি দেয়া হইতেছে- এইটা ডাক্তারগণ বুঝাইয়া দেন না। এমন অভিযোগ আছে। একই সাথে রোগীর সেই প্রকার ধৈর্য আগ্রহ (কিংবা ক্ষমতা) তৈরি হয় নাই- সেকথাও মনে রাখা জরুরি। রোগ বেরাম সম্পর্কে শুনবার আর তা বুঝবার কান-মাথার অভাব আছে বটে। এই অভাবের তাড়নায় আর হাতযশ ইত্যাদি বিশ্বাসের কারনে রোগীরা নিজেদের রোগের চাইতে ডাক্তার সম্পর্কে বেশি আগ্রহী হইয়া ওঠেন। মাঝে মাঝে উহা অসদাচারনেও গড়ায়।
...
ডাক্তারি সেবাটা বাজারে বিক্রি হয়। আপনি সেবা ক্রয় করুন। বুঝিয়া নেন। ডাক্তারের হাতযশ নাম ধামের উপর পুরাপুরি ছাড়িয়া দিলে চলে না। সম্পর্কটাকে পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে বুঝুন।

ডাক্তাররাও তাই করিবেন। রোগী কিন্তু করুনা খরিদ করিতেছে না। পয়সা খরচ করিয়া সেবা নিতে আসিয়াছে। সেবাটা বাজারি না মনে হইলেও ইহা বাজারি ব্যাপার বটে। আর বাজার চলে কম্পিটিশনে। ভাল সেবা কম দামে দেয়ার কম্পিটিশন। কাজেই একচেটিয়া বা সিন্ডিকেট নির্ভর বাজার জুলুম। এই জুলুম অবিচার জগতে মারামারির উর্বর জননী।
...
এই রোগেরই আরেক ধারার লক্ষণ হইল- শিক্ষকতাকে মহান পেশা বলা। বাঙালি শিক্ষকদের উপর মহত্ব আরোপ করার মাধ্যমে নিজের শিক্ষা ও খোঁজ খবর নেয়ার দায় হইতে মুক্তি লাভ করে। আর ভাবে মহান শিক্ষক মাহাত্ম্ দিয়া মগজ ও চরিত্রের রোগ ব্যারাম এক পলকেই সারিয়া ফেলিব। আহা, আফসোস। সে যে হয় না। সে যে হয় না।

শিক্ষক প্রাণীটাও মানুষ প্রজাতির মধ্যকার। মানুষের সীমানা লইয়াই সে থাকে। তার অসীম অলৌকিক ক্ষমতা কিংবা মাহাত্ম নাই।

টাকা পয়সা অাত্মীয় স্বজন আশা আকাংখা দ্বারা প্রভাবিত হইয়াই উহারা জমিনে বিচরণ করেন।

কাজেই অনেক ক্ষেত্রেই স্কুলে গিয়া খোঁজ লইতে হইতে পারে শিক্ষা কেমন চলিতেছে। চুপ করিয়া বসিয়া থাকিবার সুযোগ নাই।
...
মহৎ মানুষেরা যেকোন পেশায় কিংবা পেশাহীনও থাকিতে পারেন। মহত্ব দক্ষতা পেশায় নাম লেখাইলেই নাজিল হয় না।

মহত্বের উপর নির্ভর না করে বাজার কি জিনিষ তা বুঝার চেষ্টা করেন। বাজারকে নাক সিঁটকাইয়া কিংবা সাম্রাজ্যবাদ হেনতেন বলিয়া গালি দিয়া উদ্ধার পাওয়ার উপায় নাই।
...
পুনশ্চ: বাজার না বুঝলে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে লা’নত আর অভিশম্পাত দিয়া আসন্ন রোজায় উচ্চমূল্যের চাপে পড়িবেন। সমস্যার সমাধান করিতে পারিবেন না; মূল্য না বুঝিয়া বোধের চর্চা করিবেন। আর বাজার গ্রহে লুটপাটতন্ত্রের স্বাদ নিবেন।

(২৪.৫.২০১৭- খসড়া কথা। আরো ভাবিয়া আরো বলিতে হইবে।)

Sunday, March 12, 2017

ডোন্ট ডিসটর্ট দি ভাষা

 - লোকমান বিন নুর




 অাহা, প্রজন্ম ভাষাহীন হও
জিহ্বা লুকা‌য়ে রে‌খো ফ্রাইড চি‌কে‌নের ত‌লে
‌তোমা‌কে নি‌য়ে রা‌ষ্ট্রের কোন কল্পনা নেই
‌তোমা‌কে নি‌য়ে রা‌ষ্ট্রের কোন রূপকল্প নেই
‌তোমা‌কে নি‌য়ে রা‌ষ্ট্রের কোন অপরূপগল্পও নেই

রাষ্ট্র একটা বৃদ্ধ লো‌কে‌দের অাড্ডাঘর
‌তোমা‌রে ব‌লি,
গোপ‌নে যুবক হ‌য়ে ও‌ঠো
এই বয়ষ্ক ভাঁড়‌দের রা‌ষ্ট্রে দ্রুত সেয়ানা হ‌য়ে ও‌ঠো
খুব দ্রুত উদাম ক‌রো বয়‌সের ভাণ
রা‌ষ্ট্রের হুকুম লে‌খো নি‌জের জবা‌নে
নয়‌তো জিহ্বা লু‌কি‌য়ে রা‌খো ভাজামুরগীর ত‌লে

নীলপদ্য

image collected from net

 - লোকমান বিন নুর


..
মুসলিম শাসনকালে জমিদারি তৈরি হলো। আর তা আরো কঠিন রূপ ধরলো বৃটিশের আদরে। বৃটিশরা শক্তপোক্ত করে দাগ আঁকল। নম্বর দিয়ে রাখল সেই দাগে। জমির উপর দাগ দিয়ে তার নম্বর। আমরা আর কখনো হয়তো ভুলতে পারব না- দাগ নম্বর। দাগে দাগে খাজনা উসুলের হিসাব রাখল- যার নাম খতিয়ান। বিষয়ানুক্রমিক হিসাবের বই।
যার অধিকার থাকার কথা ছিল সে তা হারাল। কৃষককে খেদিয়ে উড়ে এসে জুড়ে বসল জমিদার। শাসকেরা খাজনা আদায়ের জন্য কৃষককে জমি দিল না। যাকে দিলে বেশি রাজস্ব পাওয়া যাবে সেই পেল জমি। নদী থাকল জেলেদের কাছে। আর কৃষকের কাছে থাকল তার নিজের দেহ। তার শ্রম। দাগ আর খতিয়ানের খেলায় আচমকা কৃষকেরা হয়ে গেল কৃষি শ্রমিক। কি দারুন খেলা জমিয়ে দিল বিলিতি চোরেরা। কি বৃটিশ খেলরে বাবা!
..
বৃটিশরা আইন বানানো শুরু করল। প্রকৃতির কোলে বেড়ে ওঠা কৃষক আর জেলেদের নিয়ে এল শিল্প বিপ্লবের আওয়াজ আর শোষণের ভিতর। গাজী-কালুর সন্তানেরা ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। তেলেসমাতি দেখে।
জমিন নীল হয়ে যায়। ধানের জমি নীল হয়ে যায়। পাটের জমি নীল হয়ে। গম-শর্ষে-কাউনের ক্ষেত নীল হয়ে যায়। বাদামি শরীরে লাগে নীলের জান্তব নখের আঁচড়। ধুরন্দর বৃটিশের সাদা জামা রঙিন করার নীল। শূণ্য হাড়িতে করুন তীক্ষ্ণ সুরে বেজে উঠে বেদনার নীল গান। যন্ত্রণার সমস্ত সুর ঐকতান করে গায় মজলুমের নীল কওয়ালি। ইতিহাসের পা চলে আমাদের মাথা থেতলে দিয়ে। প্রথমে অধিকার বঞ্চিত। পরে অন্যের ইচ্ছায় ভাত ছেড়ে রঙ চাষে বাধ্য হওয়া। পাতালপুরীর ইতিহাস।

পৃথিবীর ইউরোপ কিংবা পশ্চিম খণ্ডে হৃদয়ের উষ্ণতার রঙ নীল। আর বাংলায় বেদনার রং। এই নীল আসমান থেকে নামেনি। ভেসে আসেনি সমূদ্র থেকে। অথবা কলমি ফুলের পাপড়ি থেকেও গড়িয়ে পড়েনি সে নীল। এই নীল আপন জমিতে পরের সুখ চাষ করার দুঃখ। মাটির করুন রস থেকে বের হওয়া বীভৎস হাহাকার। মুহুর্তে হারিয়ে ফেলা ফোটা ফোটা শ্রমের নীল রং। মানুষের দেহ জুড়ে প্রাণের উত্তাপ দিয়ে তৈরি যে শ্রম- জোর করে কেউ নিতে চাইলে তার রং হয় নীল। ফোটাফোটা শ্রম ক্ষোভ হয়ে জমাট বাঁধলে তাকে বলি নীল বিদ্রোহ। জীবনের সম্মোহনী উস্কানিতে উদ্দীপ্ত প্রেয়সীর নাম- বিদ্রোহ। নীল রঙের বেদনা প্রখর হতে হতে গড়ে ওঠে নী--ল বিদদ্রোহ।

সে অনেক কাছের ইতিহাস। শরীরের রক্ত, মজ্জা, আর স্নায়ুতন্ত্রীতে প্রবাহিত ইতিহাস। বের করতে চাইলে ছোট্ট পৃথিবীতে সূর্যের সমান অগ্নিকাণ্ড ঘটে।
..
জমিদারি তৈরি করে মালিক শ্রেনী বানালো। কৃষক আর কৃষি জমির মাঝখানে দাঁড়াল আইন। জমিদারি আইন। রাজস্ব আইন। মানুষের শ্রম চুরির সিধকাঠি।
..
~অ-বাক. ২~
(বিজ্ঞাপন। লিখতে চাই।)

Delulu and Danger of Innocence of Law

The persistent political crisis in Bangladesh is often framed as a binary dilemma: is the nation suffering from a flawed political culture, ...